আয়ণিক বিভব বা আয়ণিক পটেনসিয়াল

একাদশ- দ্বাদশ শ্রেণি - রসায়ন - রসায়ন- প্রথম পত্র | | NCTB BOOK

আয়ণিক বিভব বা আয়ণিক পটেনসিয়াল

আয়ণিক বিভব হলো একটি নিরপেক্ষ পরমাণু থেকে একটি ইলেকট্রন অপসারণ করতে প্রয়োজনীয় শক্তি। এটি একটি মৌলের রাসায়নিক ধর্মের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সূচক। আয়ণিক বিভব সাধারণত ইলেকট্রন ভোল্ট (eV) বা কিলোজুল পার মোল (kJ/mol) এককে প্রকাশ করা হয়।

প্রথম আয়ণিক বিভব

পরমাণুর সবচেয়ে বাইরের শেল থেকে প্রথম ইলেকট্রন সরানোর জন্য যে শক্তি প্রয়োজন, তাকে প্রথম আয়ণিক বিভব বলা হয়।

দ্বিতীয় আয়ণিক বিভব

প্রথম ইলেকট্রন সরানোর পর উৎপন্ন ক্যাটায়ন থেকে আরও একটি ইলেকট্রন অপসারণ করতে যে শক্তি প্রয়োজন, তা দ্বিতীয় আয়ণিক বিভব। এটি সাধারণত প্রথম আয়ণিক বিভবের তুলনায় বেশি।


আয়ণিক বিভবকে প্রভাবিতকারী কারণসমূহ

  1. পারমাণবিক আকার
    পরমাণুর আকার যত বড় হয়, নিউক্লিয়াসের আকর্ষণ বাইরের ইলেকট্রনের উপর তত কম হয়। ফলে আয়ণিক বিভব কমে।
  2. পরমাণুর চার্জ
    পরমাণুর নিউক্লিয়াসে প্রোটনের সংখ্যা বেশি হলে ইলেকট্রনের উপর আকর্ষণ শক্তি বৃদ্ধি পায়। ফলে আয়ণিক বিভব বেশি হয়।
  3. ইলেকট্রন বিন্যাস
    স্থিতিশীল ইলেকট্রন বিন্যাসযুক্ত মৌলগুলোর আয়ণিক বিভব বেশি হয়, কারণ তাদের ইলেকট্রন অপসারণের জন্য অধিক শক্তি প্রয়োজন।
  4. স্ক্রীনিং ইফেক্ট বা শিল্ডিং প্রভাব
    ইলেকট্রন শেল বৃদ্ধির কারণে ভেতরের ইলেকট্রনগুলো বাইরের ইলেকট্রনকে নিউক্লিয়াসের আকর্ষণ থেকে আংশিকভাবে রক্ষা করে। ফলে আয়ণিক বিভব কমে।

পর্যায় সারণিতে আয়ণিক বিভবের ধারা

  • একই গ্রুপে
    উপরে থেকে নিচে নামার সময় আয়ণিক বিভব কমে, কারণ পরমাণুর আকার বৃদ্ধি পায় এবং নিউক্লিয়াসের আকর্ষণ দুর্বল হয়।
  • একই পর্যায়ে
    বাম থেকে ডানে যাওয়ার সময় আয়ণিক বিভব বৃদ্ধি পায়, কারণ পরমাণুর আকার ছোট হয় এবং নিউক্লিয়ার চার্জ বৃদ্ধি পায়।

সারসংক্ষেপ

আয়ণিক বিভব একটি মৌলের গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য যা এর রাসায়নিক প্রতিক্রিয়ার প্রকৃতি নির্ধারণে ভূমিকা রাখে। এটি পরমাণুর আকার, ইলেকট্রন বিন্যাস এবং পর্যায় সারণির অবস্থান অনুযায়ী পরিবর্তিত হয়।

Content added By
Promotion